মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন
ইমন চৌধুরী, পিরোজপুর॥ পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে চিকিৎসার সব সুব্যবস্থা। তার পরেও সরকারি এই হাসপাতালের পাশেই ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ প্রশাসনের কোনো নজরদারি না থাকায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছেন সিভিল সার্জন।
ভান্ডারিয়া উপজেলায় সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর পাশেই গড়ে উঠেছে লাবন্য ক্লিনিক অ্যান্ড নাসিং হোম ও লাবন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ বেশ কয়েকটি ক্লিনিক। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, স্থানীয় দালাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর অসাধু চিকিৎসক-কর্মচারীদের মাধ্যমে রোগীদের বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষা এবং অপারেশন করা হয় বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।
এতে এক দিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। আর অন্যদিকে সাধারণ মানুষ ভুল চিকিৎসা নিয়ে হচ্ছেন প্রতারিত। মাঝে মধ্যেই ঘটছে প্রাণহানীর ঘটনাও।
ভুক্তভোগী পলাশ হোসেন ও মিরাজ মিয়া অভিযোগ করে জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের পরীক্ষার কথা বললেই তাদেরকে পাঠিয়ে দেয়া হয় আশ পাশের ক্লিনিকগুলোতে। আর কোনো অপারেশনের বিষয় থাকলেও তাদেরকে পাঠানো হয় ক্লিনিকে।
এছাড়া গত বছরের জুন মাসে শেষ হয়েছে কয়েকটি ক্লিনিকের লাইসেন্সের মেয়াদ। মেডিকেল প্রাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরি অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী প্রত্যেক ক্লিনিকে রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত আবাসন ব্যবস্থা, প্রত্যেক শয্যার জন্য কমপক্ষে ৮০ স্কয়ার ফিট জায়গা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অপারেশন থিয়েটার, পর্যাপ্ত জীবন রক্ষাকারী ও প্রয়োজনীয় ওষুধের সংরক্ষণ, সার্বক্ষণিক নিবন্ধিত ডাক্তার, নার্স ও স্টাফ এবং অপারেশন, চিকিৎসা ও তত্ত্বাবধানের জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকতে হবে।
তবে বাস্তবে এর প্রায় সবগুলোই অনুপস্থিত এসব ব্যক্তিগত চিকিৎসাসেবা প্রদান কেন্দ্রগুলোতে। এসব কারণে রোগীরা নানাভাবে প্রতারিত হতে হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেয়া হচ্ছে ভুল রিপোর্ট। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ।
ক্লিনিকগুলোর মালিকপক্ষের দাবি, তারা নিয়ম মেনেই বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রগুলো পরিচালনা করে আসছেন।
পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসনাত ইউসুফ জাকী জানান, ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু এবং দালালদের দৌরাত্ম কমাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে পিরোজপুরে ৩৫ টি ক্লিনিক ও ৬৬ টি নিবন্ধিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। তবে বেশির ভাগ ক্লিনিকেই নেই পর্যাপ্ত ডাক্তার ও যন্ত্রপাতি।
Leave a Reply